স্বদেশ ডেস্ক:
রাজশাহীর পদ্মা নদীতে নৌকাডুবির ঘটনায় নিখোঁজ নববধূ সুইটি খাতুন পূর্ণিমার (১৬) লাশের খোঁজ অবশেষে মিলেছে। এই নিয়ে নিখোঁজ হওয়া ৯ জনের লাশের সন্ধান মিলল।
আজ সোমবার সকাল ৬টার দিকে রাজশাহী নগরীর শ্যামপুর এলাকায় পদ্মা নদী থেকে ফায়ার সার্ভিস কর্মীরা ভাসমান অবস্থায় পূর্ণিমার লাশ উদ্ধার করে। নববধূর লাশ উদ্ধারের মধ্য দিয়ে নৌকাডুবির ঘটনায় যে উদ্ধার কার্যক্রম চলছিল তার অবসান হলো।
বিষয়টি নিশ্চিত করে নৌ-পুলিশের রাজশাহী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মেহেদী হাসান বলেন, ‘দুর্ঘটনাস্থল থেকে কয়েক কিলোমিটার দূরে কাটাখালির শ্যামপুর এলাকার পদ্মা নদীতে নিখোঁজ নববধূর পূর্ণিমার লাশ ভেসে উঠে। পরে ফায়ার সার্ভিস কর্মীরা সেখানে গিয়ে তার লাশ উদ্ধার করে।’
নববধূর লাশ উদ্ধারের মধ্য দিয়ে উদ্ধার কার্যক্রমের ইতি টানা হয়েছে বলে জানান পুলিশের এই কর্মকর্তা।
এর আগে গতকাল রোববার বিকেল সাড়ে ৩টায় দুর্ঘটনাস্থল থেকে নিহত নববধূর খালা আখি খাতুনের (২৫) লাশ উদ্ধার করে ডুবুরি দল। ওইদিন দুপুরে প্রায় একই স্থান থেকে গৃহবধূর ফুফাতো বোন কিশোরী রুবাইয়া খাতুন স্বর্ণার উদ্ধার করা হয়।
এদিকে, নৌকাডুবির ঘটনায় এর আগে উদ্ধারকৃতরা হলেন- নিহত নববধূর দুলাভাই রতন আলী (৩২), চাচাতো বোন মরিয়ম (৮), চাচা শামীম (৩১), স্ত্রী মনি খাতুন (৪২), তাদের মেয়ে রোশনি (৭) ও কনের খালাতো ভাই এখলাস হোসেন (২২)।
হতাহতদের পরিবার সূত্র জানায়, বৃহস্পতিবার পদ্মার ওপারে পবা উপজেলার চরখিদিরপুর গ্রামের আসাদুজ্জামান রুমনের (২৫) সঙ্গে এপারের ডাঙেরহাট গ্রামের সুইটি খাতুন পূর্ণিমার (১৬) বিয়ে হয়। বিয়ের পর সুইটি শ্বশুর বাড়িতে ছিলেন।
শুক্রবার (৬ মার্চ) কনেপক্ষ বরের বাড়ি থেকে নবদম্পতিকে আনতে যায়। সন্ধ্যার কিছু সময় আগে তারা বরের বাড়ি থেকে বের হয়ে দুটি নৌকায় করে কনের বাড়ির উদ্দেশে রওনা দেয়। পথিমধ্যে নগরীর শ্রীরামপুরের বিপরীতে নদীর মাঝামাঝি স্থানে প্রায় ৩৬ জন বরযাত্রীসহ নৌকা দুটি ডুবে যায়। দুর্ঘটনা কবলিত নৌকা দুটি উদ্ধার হয়েছে। এ দুর্ঘটনায় কনেসহ ৯ জন ব্যতীত বাকি সবাইকে জীবিত উদ্ধার করা সম্ভব হয়েছে।
রাজশাহী জেলা প্রশাসক (ডিসি) হামিদুল হক জানান, নিখোঁজ গৃহবধূর লাশের সন্ধান মিলেছে। তাই এর মধ্য দিয়ে উদ্ধার কার্যক্রমও স্থগিত করা হয়েছে। নিখোঁজ হওয়া ৯টি লাশেরই সন্ধান মিলেছে।
তিনি আরও বলেন, ‘জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে নিহতদের পরিবারকে ২০ হাজার করে টাকা প্রদান করা হয়েছে। যারা আহত হয়েছিল তাদের চিকিৎসা ভারও প্রশাসন বহন করছে। ঘটনা তদন্তে ৭ সদস্যের কমিটি গঠন করা হয়েছিল। তদন্ত প্রতিবেদনও প্রস্তুত করা হয়েছে। অতিরিক্ত যাত্রীর কারণেই এই নৌকাডুবির ঘটনা ঘটে বলে তদন্ত প্রতিবেদনে উঠে এসেছে।’